ট্যাক্সি ধরলাম অফিসের
সামনে থেকে। ক্লান্ত, তাই উঠেই সিটে শরীরটা এলিয়ে দিলাম। অনেক রাত হয়ে গেল আজ।
হঠাৎ ড্রাইভারের সিটের পিছনে লেখা ট্যাক্সির নম্বরটা চোখে পড়তেই চমকে উঠলাম। এম-ও-ডাব্লু-৩০১।
তিন মাসে চারটে খুন। প্রত্যেকটা লাশের কাছে পাওয়া গেছে, একটা বিশেষ নম্বর প্লেট।
পুলিশ জানিয়েছে, নম্বরটার কোন অস্তিত্ব নেই। কাগজ আর টেলিভিশনে অনর্গল চর্চা,
এম-ও-ডাব্লু-৩০১-র পরবর্তী নিশানা কে? পুলিশ প্রশাসন অন্ধকারে হাতড়ে চলেছে। অপরাধ
সংগঠিত হয়েছে মধ্যরাতে কোন-না-কোন হাইওয়ের ধারে। পোস্টমর্টেম বলছে, মৃত্যুর কারণ বিষাক্ত
গ্যাস। বুঝলাম ফাঁদে পড়েছি। গাড়ি চলতে শুরু করেছে। এসি-র সাথে মিষ্টি গন্ধ। পকেট
থেকে মোবাইল বার করি। ঘাড় না ঘুরিয়ে ড্রাইভার বলে, "স্যার জ্যামার আছে।
নেটওয়ার্ক কাজ করবে না।" ড্রাইভিং মিরর দিয়ে চোখ দেখা যাচ্ছে। শান্ত মেজাজ।
যেন কোন তাড়া নেই। আমার গলা দিয়ে স্বর বেরয় না।
- কি যা তা বলছেন?
- যা তা নয় স্যার। যা
ভাবছেন, ঠিক তাই। মার্ডার-অন-হুইলে আপনাকে স্বাগত জানাই।
- কেন? আমি কি করেছি?
- আমরা কেউ কিছু করি
স্যার? সবই আগে থেকে ঠিক। আমরা নিমিত্ত মাত্র।
- প্লিজ আমায় নামিয়ে
দিন।
- এ ভাবে বলবেন না।
দুর্বল লাগে। বিশ্বাস করুন, কোন কষ্ট হয় না। প্রথমে আমরা হাইওয়ের দিকে যাবো। তারপর
এই এসি-র সাথে ঘুমের গন্ধটা আসবে। দেখবেন খুব ভালো লাগবে।
গাড়ীর হাতল টানাটানি
করতে থাকি। আবার সে শান্ত গলায় বলে, "কোন লাভ নেই, সেন্ট্রাল লক। বিশেষ ভাবে
বানানো। আমার এখান ছাড়া খুলবে না।"
রাস্তা হাইওয়েতে ওঠে।
আমি বলি, "আপনার কত টাকা চাই?"
- টাকার জন্য মার্ডার-অন-হুইল
কাজ করে না। এটা একটা মিশন। পৃথিবী কে ভার মুক্ত করতে হবে।
- আমি পৃথিবীর ভার!
আপনাকে কে বলল?
লোকটি চোখ দিয়ে হাসল। কিন্তু
চুপ করে থাকলে হবেনা। আজ সাথে ল্যাপটপের ব্যাগটাও নেই, যা দিয়ে আঘাত করা যায়। হঠাৎ
একটা কালো বেড়াল দ্রুত রাস্তা পার হয়। প্রবল শব্দে ট্যাক্সি দাড়িয়ে যায়। ইগ্নিশন
অফ করতেই সেন্ট্রাল লক খোলার শব্দ হয়। আমি কিছু না ভেবে দরজা খুলে বাইরে ঝাঁপ
দিলাম। অদূরে একটা টহলদারি গাড়ী। ট্যাক্সিটা স্পীড তুলে অন্ধকারে হারিয়ে যায়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন