মধ্যবিত্ত গেরস্ত ঘরে বাথটাব শব্দটি বিদেশি। একসময় বাথরুমেরও তেমন চল ছিল না। পাড়ার পুকুরে বা নদীতে গণস্নানের অনন্য মজা। পরে এল সার্বজনীন কল পাড়। যেখানে পাড়ার সবাই মিলে লাইন দিয়ে স্নানের আয়োজন। সম্পন্ন মানুষ নিজগৃহে তৈরি করলেন ব্যক্তিগত কলপাড়। সেখানেই বাসন মাজা গা মাজা দুই চলত। কোন কোন রাস্তার কলে গবাদিপশুর স্নানও সমান প্রচলিত।
ক্রমে কলপাড় হল কলঘর। সংযোজন হলে আরেকটি অবতারঃ চৌবাচ্চা। কেন যে এই অসামান্য শব্দটির উদ্ভাবন হল, সমাজ ও ভাষা বিজ্ঞানীরা বলতে পারবেন। কলঘরের চিত্রকল্প ও তার ব্যবহার বিভিন্ন শিল্প মাধ্যমে বারে বারে হয়েছে। ভবিষ্যতেও হবে। তার শ্যাওলা ধরা, নোনা লাগা শরীর। আধো অন্ধকারে একটি চল্লিশ পাওয়ারের বাতি। সব মিলিয়ে গল্পের আঁতুরঘর। সেই কলঘরে বা কল সংলগ্ন চৌবাচ্চায় গা ডুবিয়ে অবগাহন করার ভাবনায় সুখ আছে, তবে সেই সুখ কতজন পেয়েছেন জানা নেই।
পুলকদের বাড়িতে এমন একটি চৌবাচ্চা ছিল। পুকুরে নামতে পুলকের বড্ড ভয়। তাই রোজ স্বপ্ন দেখে, চৌবাচ্চায় ডুব দেবার। তবে ওদের চৌবাচ্চাটি ছিল এজমালি। অর্থাৎ কলঘরের বাইরে যেখানে আড়াল তো নেই, উপরন্তু এক দুই বা তিন তলার বারান্দা থেকে অনায়াসে দেখা যায়। আর দেখা গেলেই শরিকী বিদ্বেষের সানাই বেজে ওঠে। বুকের মধ্যে সেই স্নানটা জমিয়ে রেখে কোন রকমে কলঘরের অন্ধকারে মগ বালতি ব্যবহার করে পুলক।
সেবার পুলকের কাকা কোন এক সাহেবি বাড়ি ভাঙার কাজ পেয়েছিল। সেই বাড়িতে ছিল পেল্লায় এক বাথরুম। আর সেখানে ছিল এক বড়সড় বাথটাব। কাকা কি মনে করে প্রাণে ধরে ওই বস্তুটি বিক্রি করতে পারেননি। আদ্যিকালের ধাতব বাথটাব, না কি বিরাট আকার কড়াই! বাড়ির ছাদে তার অবস্থান হল। পুলক মাঝে মাঝে ছাদে এসে ওকে হাত বোলায়। এর মধ্যে একদিন তুমুল বৃষ্টির দিন। পুলককে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। বন্ধুরা যারা মাঠে বল পেটাচ্ছিল, তারাও ঘরে ফিরে এসেছে। পুরোন বাড়ি, তার দালান কোঠার আনাচ কানাচ ঢুঁড়ে কারা ছাদে এসে উপস্থিত। বৃষ্টির তোড় তখন ঝালাতে। ছাদের ওপর ফোঁটায় ফোঁটায় অজস্র জুঁইয়ের জন্ম হচ্ছে আবার নিভে যাচ্ছে। তার মধ্য সকলে অবাক হয়ে দেখে, অমন জলের ধারায় সেই সাহেবি বাথটাব কানায় কানায় পরিপূর্ণ। আর তাতে আকন্ঠ নিমগ্ন পুলক। যেন কতদিনের স্নান, যা এতদিন ধরে বুকের ভেতর জমিয়ে রেখেছিল। আগল খোলা বাঁধের মতো উছলে উঠছে। তাকে যে কেউ দেখছে, তার কোন হুঁশ নেই। যেন প্রথমবার পুলক নামের সার্থকতা খুঁজে পেল।
এখনও পুলকদের বাড়ি গেলে সেই বাথটাবটা দেখতে পাই। তবে সেটির ভেতর মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। লাগানো আছে লেবুগাছ। তাতে লেবু ধরেছে কতক। বর্ষায় লেবুফুলের থেকে কোন হারানো কৈশোরের তৃপ্ত স্নানের ঘ্রাণ ভেসে আসে।
ক্রমে কলপাড় হল কলঘর। সংযোজন হলে আরেকটি অবতারঃ চৌবাচ্চা। কেন যে এই অসামান্য শব্দটির উদ্ভাবন হল, সমাজ ও ভাষা বিজ্ঞানীরা বলতে পারবেন। কলঘরের চিত্রকল্প ও তার ব্যবহার বিভিন্ন শিল্প মাধ্যমে বারে বারে হয়েছে। ভবিষ্যতেও হবে। তার শ্যাওলা ধরা, নোনা লাগা শরীর। আধো অন্ধকারে একটি চল্লিশ পাওয়ারের বাতি। সব মিলিয়ে গল্পের আঁতুরঘর। সেই কলঘরে বা কল সংলগ্ন চৌবাচ্চায় গা ডুবিয়ে অবগাহন করার ভাবনায় সুখ আছে, তবে সেই সুখ কতজন পেয়েছেন জানা নেই।
পুলকদের বাড়িতে এমন একটি চৌবাচ্চা ছিল। পুকুরে নামতে পুলকের বড্ড ভয়। তাই রোজ স্বপ্ন দেখে, চৌবাচ্চায় ডুব দেবার। তবে ওদের চৌবাচ্চাটি ছিল এজমালি। অর্থাৎ কলঘরের বাইরে যেখানে আড়াল তো নেই, উপরন্তু এক দুই বা তিন তলার বারান্দা থেকে অনায়াসে দেখা যায়। আর দেখা গেলেই শরিকী বিদ্বেষের সানাই বেজে ওঠে। বুকের মধ্যে সেই স্নানটা জমিয়ে রেখে কোন রকমে কলঘরের অন্ধকারে মগ বালতি ব্যবহার করে পুলক।
সেবার পুলকের কাকা কোন এক সাহেবি বাড়ি ভাঙার কাজ পেয়েছিল। সেই বাড়িতে ছিল পেল্লায় এক বাথরুম। আর সেখানে ছিল এক বড়সড় বাথটাব। কাকা কি মনে করে প্রাণে ধরে ওই বস্তুটি বিক্রি করতে পারেননি। আদ্যিকালের ধাতব বাথটাব, না কি বিরাট আকার কড়াই! বাড়ির ছাদে তার অবস্থান হল। পুলক মাঝে মাঝে ছাদে এসে ওকে হাত বোলায়। এর মধ্যে একদিন তুমুল বৃষ্টির দিন। পুলককে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। বন্ধুরা যারা মাঠে বল পেটাচ্ছিল, তারাও ঘরে ফিরে এসেছে। পুরোন বাড়ি, তার দালান কোঠার আনাচ কানাচ ঢুঁড়ে কারা ছাদে এসে উপস্থিত। বৃষ্টির তোড় তখন ঝালাতে। ছাদের ওপর ফোঁটায় ফোঁটায় অজস্র জুঁইয়ের জন্ম হচ্ছে আবার নিভে যাচ্ছে। তার মধ্য সকলে অবাক হয়ে দেখে, অমন জলের ধারায় সেই সাহেবি বাথটাব কানায় কানায় পরিপূর্ণ। আর তাতে আকন্ঠ নিমগ্ন পুলক। যেন কতদিনের স্নান, যা এতদিন ধরে বুকের ভেতর জমিয়ে রেখেছিল। আগল খোলা বাঁধের মতো উছলে উঠছে। তাকে যে কেউ দেখছে, তার কোন হুঁশ নেই। যেন প্রথমবার পুলক নামের সার্থকতা খুঁজে পেল।
এখনও পুলকদের বাড়ি গেলে সেই বাথটাবটা দেখতে পাই। তবে সেটির ভেতর মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। লাগানো আছে লেবুগাছ। তাতে লেবু ধরেছে কতক। বর্ষায় লেবুফুলের থেকে কোন হারানো কৈশোরের তৃপ্ত স্নানের ঘ্রাণ ভেসে আসে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন