সেই কোন কালে স্বয়ং শিব্রাম বলে গিয়েছেন দেবতার জন্মের কথা। তারপরেও বহু দেবতাকে আমরা রাস্তায়, ঘাটে, রিক্সাস্ট্যান্ডে, বটগাছ তলায় জন্মাতে দেখেছি। গাছ ক্রমশঃ বিরল হয়ে যাওয়ায়, আজকালকার দেবতার বটপ্রাপ্তি খুব একটা ঘটে না। তাঁদের নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা গল্প, গাথা, গান। এ কথা সত্যি, মানুষ বড় দুর্বল। তার সেই অসহায়তার সুযোগ নিয়ে ঢুকে পড়ে দেবতা ভুত ও তাদের জয়গাথা। তবে দেশ এগিয়েছে। এখনকার দেবতার উথ্থান, সে কালের মত নয়। রীতিমত কর্পোরেট আকার নিয়ে আবির্ভূত হন। গোবিন্দের বাড়ি বড় রাস্তার ওপর। সেখানে সার সার মাঝারি মাপের কারখানা। এক সময় নতুন কারখানার সাথে একটি মন্দিরও তৈরি হত। ছোট বড় কর্তা ব্যক্তিরা আপিস আসার পথে সেখানে মাথা ঠুকে আসেন।
বেশ কিছু পুরোন কারখানার গনেশ উল্টানোর পর, বড় বড় শেডগুলো কিছুদিন ভুতের মতো দাঁড়িয়ে থাকে। শিল্প মরে গেলে, চুরি শিল্প গড়ে ওঠে। বছরখানেকের মধ্যে মেশিনপত্র, দরজা, জানালা সব রাতের অন্ধকারে পাচার হয়ে যায়। শেষমেষ শুধু ইঁটের কঙ্কালটা কিছুদিন নিজের প্রাচীন অস্তিত্বের জানান দেয়। তারপর একদিন সেই ইঁটগুলোও কারা যেন সব খুলে নিয়ে যায়। এখন আর কারো বোঝার উপায় নেই, কোনো কালে এখানে শয়ে শয়ে মানুষ চার শিফ্টে কাজ করেছে, বিশ্বকর্মা পুজোতে আনন্দ করেছে।
সে যাই হোক, কালের নিয়মে আসে নতুন মালিক। সেই পড়ে থাকা জমিতে তৈরী হল নতুন কারখানা। সে যেমন তার বিস্তার, তেমনি তার জাঁক। তবে সেই নতুন কারখানার সাথে কোন ছোট মন্দির তৈরী হল না। শুরু হল এক বিরাটাকায় ইমারত। গঠন শৈলীতে আন্দাজ হয় কোন দেবতার স্থান নিশ্চিত। কিন্তু অধিষ্ঠান কার হবে, তা নিয়ে সংশয় হয়। কেউ কিছু জানে না। কেউ বলে ভোলেনাথ, তো কেউ বলেন বজরংবলী, কেউ বলেন মায়ের স্থান তো কেউ বলেন বিশ্বকর্মা। এতবড় নতুন আই-এস-ও প্রাপ্ত কোম্পানির পক্ষে একটা মানানসই দেবতা না হলে চলবে কি করে। জল্পনা শুরু হয়, মালিকের গৃহদেবতা কে? তাঁর দেশ কোথায়? তাঁর পুরোহিত কোথাকার, গোত্র কি? এমন নানা রকম মতবাদ ও মতভেদ। কেউই কিন্তু সঠিক যুক্তিগ্রাহ্য কথা বলতে পারে না।
ওদিকে নতুন মালিক আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত। ঝুলিতে এক আধটা বিদেশি ডিগ্রীও আছে। তিনি আর পাঁচ জনের মতো শুধু আবেগের বশে মন্দির তৈরি করবেন না, বলাই বাহুল্য। একটা বোর্ড তৈরি হয়েছে। সেখানে নাম করা পরামর্শদাতা কোম্পানির তাবড় মানুষরা আসলেন। তাঁদের কাজ হল, মার্কেট স্টাডি করে রিপোর্ট তৈরি করে দেওয়া, এখানে কোন দেবতার অধিষ্ঠান হতে পারে।
কাজের বরাত পেয়ে সবাই মাঠে নেমে পড়েন। প্রথমে দেখতে হবে ত্রিশ কিলোমিটার ব্যাসে কোন কোন দেবতা ইতিমধ্যে আছেন। তারপর, তাঁদের প্রত্যেকের সম্মান সূচক কত? প্রাণামী, প্রতিদিনের গড় ভক্ত সংখ্যা, কোন অলৌকিক গল্প আছে কিনা, পুরোহিতের সামাজিক প্রতিষ্ঠা ইত্যাকার নানা বিষয়ের সাথে অত্যন্ত জটিল অঙ্কের সমীকরণে গঠিত এই সূচক। এরপর আসবে, ভক্তকুল কারা? তাঁরা সমজের কোন স্তরের নাগরিক? বাস্তবিক, এর ওপর নির্ভর করবে, প্রসাদ কেমন হবে? নাট মন্দিরে এসি হবে না পাখা? চরণামৃতে মিনারাল ওয়াটার না কর্পোরেশনের জল? এমন আরো সব সিদ্ধান্ত। তিন মাসের অসাধ্য সাধন করে রিপোর্ট তৈরি হল। সে রিপোর্ট কোম্পানির বড়কর্তাদের সমীপে পেশ করা হল। গলাবন্ধ টাই আর স্যুট পরিহিত পরামর্শদাতারা তথ্যের কারিকুরি আর নানাবিধ অনুষঙ্গে নিদান দিলেন, ভজাইবাবা। সবার চোখ কপালে! এ বলে কিরে? মহাকাল মহাকালি থেকে নিত্যানন্দ শ্রীচৈতন্য ছেড়ে ভজাইবাবা? তিনি কে? পরামর্শদাতারা একটুও দমেননি। তাঁরা পুরাণ খুলে বার করেন এই বাবার অস্তিত্ব। দীর্ঘ ভজনা করে তাঁর সিদ্ধি। তাই তাঁর নাম ভজাইবাবা। কাছাকাছি এখনও দ্বিতীয় কোন মন্দির নেই। আর বাবার নামের একটা পেটেন্ট বা রেজিস্ট্রি করে নিলে, ভবিষ্যতে অন্য কারো পক্ষে এই বাবার মন্দির করা আইনতঃ অসম্ভব হবে না।
শুধু তাই নয়, পরামর্শদাতাদের রিপোর্টে থাকল আরো অনেককিছু। আগামী বছরগুলোর সম্পূর্ণ রোডম্যাপ। প্রথমে একটি বিশ্বাসযোগ্য, ভক্তি উদৃককারী মূর্তি। নিত্যপুজোর সমস্ত নিয়ম কানুন। বছরের কোন কোন যোগে কি কি উৎসব হবে। সে উৎসবে মানুষ মিছিল করে আসবেন। প্রথম তিন বছর সেই মিছিলে লোক সাপ্লাই করবেন কোম্পানির ম্যান-পাওয়ার ডিপার্টমেন্ট। কোম্পানির পক্ষ থেকে দেওয়া হবে বাবার ছবি সহ ইউনিফর্ম, খাবার, মিষ্টি এবং সম্মান দক্ষিণা। প্রতি দুই কিলোমিটার অন্তর মাইক সহযোগে থাকবে ছোট ছোট প্রসাদ বিতরন ক্যাম্প। যারা খিচুড়ি, পায়েস, জল দিয়ে এই ভক্তকুল কে বরন করবে। পরমর্শদাতার ব্যক্তব্য তিন বছর এই মিছিলে টাকা ঢাললে, অচিরে উৎসবগুলো সমাজের অঙ্গ হয়ে যাবে। মানুষ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মিছিলে যোগদান করবেন। জেলায় প্রায় দুশো চায়ের দোকান কে নিয়মিত খরচ দেওয়া হবে, বাবার থানে পুজো দিয়ে কি লাভ হয়েছে তার ছোট ছোট গল্প হুইসপারিং ক্যাম্পেনের মাধ্যমে প্রচার করতে হবে।
পরামর্শের মধ্যে সংযোজিত হল এক জীবনীকারের নাম। তিনি বাবাজীর জীবনী নিয়ে স্ক্রীপ্ট তৈরি করবেন। আর তা নিয়ে হবে সিরিয়াল। সেই সিরিয়ালে বিজ্ঞাপনদাতা রূপে থাকবে একমাত্র এই কোম্পানির অধিকার। এতে বাবাজীর জীবন কথা প্রচারও হবে সাথে টি-আর-পি বৃদ্ধি, ও ব্যাবসা বৃদ্ধি। এবং সবচেয়ে মূল্যবান যে ভবিষ্যতবানী; তা আগামী বছরগুলোতে কি হারে প্রণামী আসবে তার একটা সুচিন্তিত মতামত। সেটা সম্পূর্ণ ট্যাক্স মুক্ত।
ব্যাস আর পায় কে? হই হই করে ভজাইবাবার যাত্রা শুরু হয়ে গেল। মেগা ইভেন্টের পরিকল্পনা রোডম্যাপেই ছিল, সাথে যুক্ত হল শহরের সবচেয়ে নামি ইভেন্ট ম্যানেজার। তারা এলেন, ধামাকা দিলেন এবং জিতে নিলেন। বাসস্ট্যান্ডের একটা আটপৌরে নাম ছিল কোন পুর বা বাগান। এখন তা ‘ভজাইবাবার মন্দির’ নামেই অধিক প্রসিদ্ধ। আগের নামটা কারো হয়তো আর মনে নেই। সিরিয়ালের জনপ্রিয়তাও উর্দ্ধমুখী। নামী তারকারা সব অভিনয় করছেন। তাঁরাও খুব খুশি।
গোবিন্দ সহ আরো হাজার স্থানীয় লোক রোজ এই মন্দিরের সামনে দিয়েই যাতায়াত করে, ভিতরের গদগদ ভক্তি সংগীত শুনতে পায়। প্রথম প্রথম দূর থেকে, ক্রমে অনেকে ভিতরে গিয়েও প্রনাম করে আসে। জনান্তিকে খবর কোম্পানির নিজস্ব ব্যবসার চেয়ে বাবাজীর মন্দিরের আয় নাকি বহুগুণ বেশি। পরামর্শদাতা কোম্পানিটিও নাকি এই আয়ের একটি লভ্যাংশ পায়। তার অনেকটাই অবশ্য বাবাজীর নামে ভান্ডারা দিতে খরচও করেন। আর কোম্পানির মালিক স্বয়ং “সব বাবাজীর কৃপা” বলে সকাল সন্ধ্যে নাট মন্দিরে অন্য সাধারন ভক্তদের সাথে প্রায় আধ ঘন্টা করে সময় কাটান। সব মিলিয়ে ভজাইবাবার মন্দির এখন এক জনপ্রিয় তীর্থ স্থানে পরিণত।
বেশ কিছু পুরোন কারখানার গনেশ উল্টানোর পর, বড় বড় শেডগুলো কিছুদিন ভুতের মতো দাঁড়িয়ে থাকে। শিল্প মরে গেলে, চুরি শিল্প গড়ে ওঠে। বছরখানেকের মধ্যে মেশিনপত্র, দরজা, জানালা সব রাতের অন্ধকারে পাচার হয়ে যায়। শেষমেষ শুধু ইঁটের কঙ্কালটা কিছুদিন নিজের প্রাচীন অস্তিত্বের জানান দেয়। তারপর একদিন সেই ইঁটগুলোও কারা যেন সব খুলে নিয়ে যায়। এখন আর কারো বোঝার উপায় নেই, কোনো কালে এখানে শয়ে শয়ে মানুষ চার শিফ্টে কাজ করেছে, বিশ্বকর্মা পুজোতে আনন্দ করেছে।
সে যাই হোক, কালের নিয়মে আসে নতুন মালিক। সেই পড়ে থাকা জমিতে তৈরী হল নতুন কারখানা। সে যেমন তার বিস্তার, তেমনি তার জাঁক। তবে সেই নতুন কারখানার সাথে কোন ছোট মন্দির তৈরী হল না। শুরু হল এক বিরাটাকায় ইমারত। গঠন শৈলীতে আন্দাজ হয় কোন দেবতার স্থান নিশ্চিত। কিন্তু অধিষ্ঠান কার হবে, তা নিয়ে সংশয় হয়। কেউ কিছু জানে না। কেউ বলে ভোলেনাথ, তো কেউ বলেন বজরংবলী, কেউ বলেন মায়ের স্থান তো কেউ বলেন বিশ্বকর্মা। এতবড় নতুন আই-এস-ও প্রাপ্ত কোম্পানির পক্ষে একটা মানানসই দেবতা না হলে চলবে কি করে। জল্পনা শুরু হয়, মালিকের গৃহদেবতা কে? তাঁর দেশ কোথায়? তাঁর পুরোহিত কোথাকার, গোত্র কি? এমন নানা রকম মতবাদ ও মতভেদ। কেউই কিন্তু সঠিক যুক্তিগ্রাহ্য কথা বলতে পারে না।
ওদিকে নতুন মালিক আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত। ঝুলিতে এক আধটা বিদেশি ডিগ্রীও আছে। তিনি আর পাঁচ জনের মতো শুধু আবেগের বশে মন্দির তৈরি করবেন না, বলাই বাহুল্য। একটা বোর্ড তৈরি হয়েছে। সেখানে নাম করা পরামর্শদাতা কোম্পানির তাবড় মানুষরা আসলেন। তাঁদের কাজ হল, মার্কেট স্টাডি করে রিপোর্ট তৈরি করে দেওয়া, এখানে কোন দেবতার অধিষ্ঠান হতে পারে।
কাজের বরাত পেয়ে সবাই মাঠে নেমে পড়েন। প্রথমে দেখতে হবে ত্রিশ কিলোমিটার ব্যাসে কোন কোন দেবতা ইতিমধ্যে আছেন। তারপর, তাঁদের প্রত্যেকের সম্মান সূচক কত? প্রাণামী, প্রতিদিনের গড় ভক্ত সংখ্যা, কোন অলৌকিক গল্প আছে কিনা, পুরোহিতের সামাজিক প্রতিষ্ঠা ইত্যাকার নানা বিষয়ের সাথে অত্যন্ত জটিল অঙ্কের সমীকরণে গঠিত এই সূচক। এরপর আসবে, ভক্তকুল কারা? তাঁরা সমজের কোন স্তরের নাগরিক? বাস্তবিক, এর ওপর নির্ভর করবে, প্রসাদ কেমন হবে? নাট মন্দিরে এসি হবে না পাখা? চরণামৃতে মিনারাল ওয়াটার না কর্পোরেশনের জল? এমন আরো সব সিদ্ধান্ত। তিন মাসের অসাধ্য সাধন করে রিপোর্ট তৈরি হল। সে রিপোর্ট কোম্পানির বড়কর্তাদের সমীপে পেশ করা হল। গলাবন্ধ টাই আর স্যুট পরিহিত পরামর্শদাতারা তথ্যের কারিকুরি আর নানাবিধ অনুষঙ্গে নিদান দিলেন, ভজাইবাবা। সবার চোখ কপালে! এ বলে কিরে? মহাকাল মহাকালি থেকে নিত্যানন্দ শ্রীচৈতন্য ছেড়ে ভজাইবাবা? তিনি কে? পরামর্শদাতারা একটুও দমেননি। তাঁরা পুরাণ খুলে বার করেন এই বাবার অস্তিত্ব। দীর্ঘ ভজনা করে তাঁর সিদ্ধি। তাই তাঁর নাম ভজাইবাবা। কাছাকাছি এখনও দ্বিতীয় কোন মন্দির নেই। আর বাবার নামের একটা পেটেন্ট বা রেজিস্ট্রি করে নিলে, ভবিষ্যতে অন্য কারো পক্ষে এই বাবার মন্দির করা আইনতঃ অসম্ভব হবে না।
শুধু তাই নয়, পরামর্শদাতাদের রিপোর্টে থাকল আরো অনেককিছু। আগামী বছরগুলোর সম্পূর্ণ রোডম্যাপ। প্রথমে একটি বিশ্বাসযোগ্য, ভক্তি উদৃককারী মূর্তি। নিত্যপুজোর সমস্ত নিয়ম কানুন। বছরের কোন কোন যোগে কি কি উৎসব হবে। সে উৎসবে মানুষ মিছিল করে আসবেন। প্রথম তিন বছর সেই মিছিলে লোক সাপ্লাই করবেন কোম্পানির ম্যান-পাওয়ার ডিপার্টমেন্ট। কোম্পানির পক্ষ থেকে দেওয়া হবে বাবার ছবি সহ ইউনিফর্ম, খাবার, মিষ্টি এবং সম্মান দক্ষিণা। প্রতি দুই কিলোমিটার অন্তর মাইক সহযোগে থাকবে ছোট ছোট প্রসাদ বিতরন ক্যাম্প। যারা খিচুড়ি, পায়েস, জল দিয়ে এই ভক্তকুল কে বরন করবে। পরমর্শদাতার ব্যক্তব্য তিন বছর এই মিছিলে টাকা ঢাললে, অচিরে উৎসবগুলো সমাজের অঙ্গ হয়ে যাবে। মানুষ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মিছিলে যোগদান করবেন। জেলায় প্রায় দুশো চায়ের দোকান কে নিয়মিত খরচ দেওয়া হবে, বাবার থানে পুজো দিয়ে কি লাভ হয়েছে তার ছোট ছোট গল্প হুইসপারিং ক্যাম্পেনের মাধ্যমে প্রচার করতে হবে।
পরামর্শের মধ্যে সংযোজিত হল এক জীবনীকারের নাম। তিনি বাবাজীর জীবনী নিয়ে স্ক্রীপ্ট তৈরি করবেন। আর তা নিয়ে হবে সিরিয়াল। সেই সিরিয়ালে বিজ্ঞাপনদাতা রূপে থাকবে একমাত্র এই কোম্পানির অধিকার। এতে বাবাজীর জীবন কথা প্রচারও হবে সাথে টি-আর-পি বৃদ্ধি, ও ব্যাবসা বৃদ্ধি। এবং সবচেয়ে মূল্যবান যে ভবিষ্যতবানী; তা আগামী বছরগুলোতে কি হারে প্রণামী আসবে তার একটা সুচিন্তিত মতামত। সেটা সম্পূর্ণ ট্যাক্স মুক্ত।
ব্যাস আর পায় কে? হই হই করে ভজাইবাবার যাত্রা শুরু হয়ে গেল। মেগা ইভেন্টের পরিকল্পনা রোডম্যাপেই ছিল, সাথে যুক্ত হল শহরের সবচেয়ে নামি ইভেন্ট ম্যানেজার। তারা এলেন, ধামাকা দিলেন এবং জিতে নিলেন। বাসস্ট্যান্ডের একটা আটপৌরে নাম ছিল কোন পুর বা বাগান। এখন তা ‘ভজাইবাবার মন্দির’ নামেই অধিক প্রসিদ্ধ। আগের নামটা কারো হয়তো আর মনে নেই। সিরিয়ালের জনপ্রিয়তাও উর্দ্ধমুখী। নামী তারকারা সব অভিনয় করছেন। তাঁরাও খুব খুশি।
গোবিন্দ সহ আরো হাজার স্থানীয় লোক রোজ এই মন্দিরের সামনে দিয়েই যাতায়াত করে, ভিতরের গদগদ ভক্তি সংগীত শুনতে পায়। প্রথম প্রথম দূর থেকে, ক্রমে অনেকে ভিতরে গিয়েও প্রনাম করে আসে। জনান্তিকে খবর কোম্পানির নিজস্ব ব্যবসার চেয়ে বাবাজীর মন্দিরের আয় নাকি বহুগুণ বেশি। পরামর্শদাতা কোম্পানিটিও নাকি এই আয়ের একটি লভ্যাংশ পায়। তার অনেকটাই অবশ্য বাবাজীর নামে ভান্ডারা দিতে খরচও করেন। আর কোম্পানির মালিক স্বয়ং “সব বাবাজীর কৃপা” বলে সকাল সন্ধ্যে নাট মন্দিরে অন্য সাধারন ভক্তদের সাথে প্রায় আধ ঘন্টা করে সময় কাটান। সব মিলিয়ে ভজাইবাবার মন্দির এখন এক জনপ্রিয় তীর্থ স্থানে পরিণত।